যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টা ও প্রক্টরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন লাইব্রেরি ভবনের সম্মুখ সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: আমজাদ হোসেন ড. ইঞ্জি.। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীসমূহ হলো- ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। তদন্ত কমিটিতে কমপক্ষে ২ জন জেষ্ঠ্য শিক্ষার্থী রাখতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় বর্হিভূত বিশেষজ্ঞ দ্বারা কমিটি গঠন করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একজন করে দুইজন, একজন আইনজীবী ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্মুখে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং ক্যাম্পাসে একটি এনিম্যাল রেসকিউ টিম গঠন করতে হবে।

মানববন্ধনে ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন ড. ইঞ্জি. বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃশংস ভাবে যে কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

শিক্ষার্থীদের সাথে এ মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করছি।শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহের সাথে আমি সহমত পোষণ করি এবং আমি এই কুকুরগুলোর হত্যার উপযুক্ত বিচার দ্রুত চাই।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা বলেন, মাননীয় উপাচার্য মহোদয় অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন স্যার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক। আমরা আশা করি, অবিলম্বে আমাদের সকল দাবীসমূহ মেনে নিয়ে খুশির খবর দিবেন।

উল্লেখ্য, জলাতঙ্ক দিবসে গত বুধবার যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে সুস্থ সবল ১৮ টি কুকুরকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা করে গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন,ঘটনাটি তাঁদের অজানা। তবে বিষ প্রয়োগকারী ব্যক্তি জাকির মিয়া বলেছেন, কুকুর নিধনের জন্য দুই হাজার টাকার চুক্তিতে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নির্দেশনায় তিনি কুকুর হত্যা করেছেন। এদিকে মুন্সি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি কুকুর মারতে নির্দেশ দেয়নি। কে বা কারা মেরেছে আমি তাদের চিনি না।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,ছাত্রনেতারাসহ দেশের বিশেষজ্ঞমহল ও সাধারণ মানুষ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তদন্ত পূর্বক এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।